বিগত দশ বছর ধরে আমরা বিরাজমান। কিছু প্রউক্তুশিল কারণে আমাদের মেইন ওয়েবসাইটটি কিছুদিন বন্ধ ছিল। আমাদের কাজ চলছে, আমরা আবার আসিব ফিরে। কিন্তু ততদিন আমাদের এতদিনের আর্কাইভটা প্রকাশ করা থাকল। অনেক পুরনো জিনিসপত্র পাবেন, যদি কারর কন আপত্তি থাকে আমাদের কে মেইল করে জানাবেন। admin@werbangali.com
আপনি যদি আমাদের e-commerce shop খুজ্জেন তাহলে এই লিঙ্ক এ ভিজিট করুন : shop.werbangali.com

অজানা টানেরই নাম ভালোবাসা - বিশ্বজিৎ সরকার

-সুবু ওই সুবু ওঠরে এবার যেতে হবে।
সুবু রেগে ওর মা কে বলল
-সারাক্ষন জ্বালাতন করা ছাড়া আর কোন কাজ নেই নাকি তোমার ? আজ যাবনা কলেজ। যাওতো ঘুমাতে দাও।
তখন ১১টা বাজে ঘুম থেকে উঠে সুবু জলখাবার খেয়ে হটাত ওর মা কে বলল
-মা ও মা, কোথায় যে থাকে ও মা শুনছো...
-হ্যাঁ রে বল ...
-২০০টা টাকা দাওত।
-কি করবি ২০০ টাকা নিয়া...?
-আরে দাওই না আজ বন্ধুরা মিলে একটু ঘুরতে যাচ্ছি।
ওর মা দিয়াদিল ২০০ টাকা, সুবু জুতোটা পরে বেরিয়ে গেল।
-সাবধানে যাস বাবা, তারাতারি ফিরিস।
সুবুর ভালবন্ধু ছিল অভি... ভালনাম অভিব্রত। ওদের দেখাকরার কথাছিল ১১টা নাগাদ। ও রীতিমত দেরি করে গিয়া পৌছালো ১২টা ৩০ নাগাদ। অভি তো রেগে আগুন হয় চলেই যাচ্ছিল, হটাত পিছন থেকে...
-ভাই এসে গেছি, বলিস না আর এত ভিড়ছিল যে কি বলব...
-ছাড় অনেক শুনেছি তোর এই বাহানা গুলো।
-ভাই রাগ করিসনা... বুঝতেই তো পারছিস একটু দেরি হয়গেছে।
অভি একটু ভারি গলায়
-চলচল অনেক হয়ছে।
ওদের যাওয়ার কথা কুনালের বাড়ি। আজ কুনালের জন্মদিন, সকাল থেকেই ওদের থাকার কথা ছিল। ওরা ওই ১.৪৫ নাগাদ পৌছালো।
পৌঁছেই সুবু দৌড়ে গিয়ে কুনাল কে বলল
-হাপি বার্থ ডে ভাই...
ওমনি পাশ থেকে অপর্ণা বলল
-এই যে এখন আসার সময় হল বাবুদের।
অপর্ণা, একটা মিষ্টি মেয়ে। সুবুর সাথে সেই ছোট্ট বেলাথেকে পড়ছে একসাথে। সুবুর প্রতি একটা টানতো আছেই ওর। কিন্তু অতটা প্রকাশ করেনা মেয়েটা।
তখন সুবু রেগে গিয়ে জোরে বলল
-তাতে তোর কিরে...? আমার ব্যাপার আমি কক্ষন আসব।
অপর্ণা কিছু বলল না, একটা মৃদু হাসি হেঁসে ভিতরের ঘরে চলে গেল। সুবু একটুকুও বুঝতনা যে অপর্ণা ওকে ভালবাসে। ওকে বুঝতইনা সুবু। আর অপর্ণা ভিতরে ভিতরে নিজের কষ্টটা চেপে রাখত।
তখন বিকালবেলা সবাই মিলে বাইরে বেরল। অপর্ণা সুবুর কাছাকাছি হাঁটছিল আস্তে আস্তে ওর পাশে এল এসে বলল
-তোর সঙ্গে একটু আলাদা ভাবে কথা বলব, সময় হবে তোর...?
সুবু অবাকভাবে বলল
-আমার সঙ্গে কথা তাও আবার আলাদা ভাবে। কেন কি কথা বল...
অপর্ণা একটু গম্ভিরভাবে বলল
-তোর সময় হবে কি...?
-হ্যাঁ হবে... কেন হবে না... বল কখন কোথায়...
-তাহলে আজ ফেরার পথে আমরা একসঙ্গে ফিরব।
সুবু কিছুক্ষন ভাবলো তারপর বলল
-আচ্ছা তাই হোক।
ওরা কুনালের বাড়ির কাছে একটা পার্ক এ গিয়া আড্ডা মারল। তারপর ওই ৫টা নাগাদ যে যার বাড়ির দিকে রওনা দিল। সুবুও ওর বাড়ির দিকে যেতে শুরু করেছিল হটাত অপর্ণা পিছন থেকে
-জানতাম ভুলে যাবি।
সুবু মাথায় হাত দিয়ে
-ও হ্যাঁ ভুলে গেছিলামরে বল কি বলবি...?
অপর্ণা গলাটা একটু মিষ্টি করে বলল
-আমি কি এততাই বাজে রে যে সব সময় আমার সঙ্গে এইরম ব্যাবহার করিস...?
-তুই কি কিছুই বুঝিস না ?
-তোর এতবার কষ্ট দেওয়ার পরও কেন তোর কাছে যাই বুঝিস না...?
সুবু ইয়ারকি মেরে
-সেটা তোর প্রবলেম আমি কি বলব...? এতে বঝার কি আছে ?
অপর্ণা কিছুক্ষন চুপ থেকে ওর দিকে তাকিয়ে বলল
-এটাই আসা করেছিলাম তোর থেকে।
বলে অন্য রাস্তা দিয়া চলে গেল। সুবু তখন সেখানে চুপ করে দারিয়ে এতক্ষন কি হল ওর মাথার ওপর দিয়া বেরিয়া গেল। তারপর একটা জিনিস এ ভাবতে ভাবতে ও সারা রাত কাটিয়ে দিল
-ওর চোখে জল ছিল কেন...? আমি কি কিছু ভুল বলে ফেলেছি...?
পরদিন অভি কে কলেজ এ সব ঘটনা টা বলল... সব শুনে অভি বলল
-নামেই তুই বড় হয়ছিস অন্নের মনের কথা বঝার মত বয়স তোর হয়নি
এই বলে অভি চলে গেল...
তারপর আস্তে আস্তে এই কথা টা সুবুর মাথা থেকে বেরিয়েই গেল। ওদের দেখা হত একে অপর কে দেখে হাসত কিন্তু তেমন কোন কথা হত না ওদের, সুবু বুঝতে পারত ওকে অপর্ণা ভালবাসে তবুও ওকে দূরে সরিয়ে দিত।
তখন পুজার ছুটি পরল। সুবু এই ছুটিতে ওর মামার বাড়ি ঘুরতে গেল। সেখানে ছিল ওর দিদা, যাকে ও খুব ভালবাসত, সবকিছু বলত। তা এবার ছুটিতে গিয়ে অপর্ণার ব্যাপারে বলল
-আচ্ছা দিদা ও কি বলতে চেয়েছিল ?
ওর দিদা একটু হেঁসে বলল
-দাদুভাই ওই মেয়েটাকে কষ্ট দিওনা ও যে তোমায় খুব ভালবাসে।
শুনেই সুবু বলল
-ধুর বাবা ওই সব বুঝি না।
-একদিন ঠিক বুঝবে দাদুভাই, দেখো সেই দিন তা যেন খুব দেরি না হয় যায়।
-আচ্ছা দিদা এই ভালবাসাটা আসলে কি...?
ওর দিদা হেঁসে বলল
-ওই কথা পরে হবেক্ষন, আগে দাদুভাই এত দিন পর এসেছ আমার একটা জিনিস এনে দেবে...??
সুবু উৎসাহের সঙ্গে বলল
-হ্যাঁ কেন দেব না...একবার বলে তো দেখো।
একটু মৃদু হেঁসে দিদা বলল
-পাশের ক্ষেত থেকে সব থেকে বড় কাশফুলটা তুলে আনবে আমার জন্য...?
শুনে সুবু তো ছুটে বেরিয়া গেল। ক্ষেতে গিয়ে দেখল ওর মত আর অনেকে কাশফুল তুলতে এসেছে। ও খুঁজতে শুরু করল একটার পর একটা, হটাত একটা বড় কাশফুল দেখতে পেল, ভাবল একটু ভিতরে গেলে হয়তো আর বড় পাব, এই ভাবে খুঁজতে খুঁজতে শেষ মাথায় চলে গেল, তারপর ভাবল সেটাই সবথেকে বড় ছিল ওটাই নিয়া যাই। এসে দেখে ও বাবা ওটা কেউ নিয়া চলে গেছে... মুখ ভার করে এসে দিদাকে সব বলল, ওর দিদা হাসতে হাসতে বলল
-দেখলে তো দাদুভাই তোমার উত্তর পেয়েগেলে,ভালবাসা এরকমই জীবনে এমন কাউকে পাবে এ তোমায় সবথেকে বেশি ভালবাসে, কিন্তু তুমি অন্য কাউকে খুঁজতে গিয়া সেই ভালবাসা হারিয়ে ফেলবে, কিন্তু একদিন উপলব্ধি করবে যে সবচেয়ে উজ্জ্বল তারাটাকে খুঁজতে গিয়ে আসল চাঁদ কে তুমি হারিয়ে ফেলেছ।।