বিগত দশ বছর ধরে আমরা বিরাজমান। কিছু প্রউক্তুশিল কারণে আমাদের মেইন ওয়েবসাইটটি কিছুদিন বন্ধ ছিল। আমাদের কাজ চলছে, আমরা আবার আসিব ফিরে। কিন্তু ততদিন আমাদের এতদিনের আর্কাইভটা প্রকাশ করা থাকল। অনেক পুরনো জিনিসপত্র পাবেন, যদি কারর কন আপত্তি থাকে আমাদের কে মেইল করে জানাবেন। admin@werbangali.com
আপনি যদি আমাদের e-commerce shop খুজ্জেন তাহলে এই লিঙ্ক এ ভিজিট করুন : shop.werbangali.com

আকাশ কুসুম - SUDIPTA KR GHOSAL

আকাশ কুসুম -সুদীপ্ত কুমার ঘোষাল “আকাশ” এবং “কুসুম” একটা মিষ্টি দম্পতি, যারা ৬ মাস হল বাড়ির অমতে বিয়ে করে ভালোবাসা নগরে একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকে । দু’বছর আগে একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পাশ করে, দু’জনে দুটি ভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করছে । চারিত্রিক দিক থেকে কুসুম যতটাই গম্ভীর এবং উচ্চাকাঙ্খী, ঠিক ততটাই নির্বিকার ও বিন্দাস প্রকৃতির ছেলে হল আকাশ । মনের দিক থেকে দু’জনেই যদিও সৎ এবং সরল । পড়াশোনায় ভালো হওয়ার সুবাদে, বর্তমানে কুসুম একটি বহুজাতিক সংস্থায় টিমলিডারের ভূমিকায় বেশ সাবলীল, যেখানে আকাশ কিনা একটা ছোটো কোম্পানিতে কর্মরত । নিজের এই ছোটো কোম্পানিতে কাজ করাটাকে আকাশ কখনও সেভাবে আমলও দেয়না । তার লক্ষ্যগুলো ছোট, খুব অল্পতেই সন্তষ্ট সে, কিন্তু, কুসুমের কাছে আকাশের এই উদাসীন ভাব একেবারে অপছন্দের, কারণ, তার চোখে যে নিজের সাথে সাথে আকাশকে নিয়েও প্রচুর স্বপ্ন । দুই পরিবারের কাছে কিছু একটা প্রমাণ করার তাগিদ, কুসুমকে যেন সবসময় অস্থির করে তোলে । কয়েক মাস আগেও কুসুমের এইধরনের ভাবনাচিন্তার লেশমাত্র ছিল না, কারণ, ৫ বছরের সম্পর্কের পর ওদের বিয়ে, নতুন করে একটা ছেলেকে চেনার মত আর কী বা অবশিষ্ট থাকে ! তবু আজ যেন আকাশকে তার একটু বেশীই অচেনা লাগে । তাই যখন ওদের ভালবাসা এবং বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিৎ, তখন কুসুমের মাথায় দেখা দিল কিছু অদ্ভুত চিন্তা ! আজকাল কুসুমের মনে হয়, আকাশ খুবই চঞ্চল, বিচারবুদ্ধিও কম ! তাই আকাশকে সে নিজের মতো করে চালাতে চাইছে, নিজের স্বপ্নগুলোকে সে আকাশেরও স্বপ্ন হিসেবে ধরে নিয়েছে, আর এখানেই দু’জনের মধ্যে দেখা দিল মনের অমিল । আকাশের বিন্দাস জীবনে কুসুমের এই কড়া নজরদারী, আকাশকে মানসিকভাবে দুর্বিষহ করে তুলল । তাইতো সারাদিন দু’জন ভিন্ন অফিসে কাজ করেও যতই এস.এম.এস বা ফেসবুক করুক, সন্ধ্যাবেলায় ঘরে ফিরেই শুরু হয় যুদ্ধ ! ওদের এই নিত্য দিনের ঝামেলার জন্য, ফ্ল্যাটের লোকেরা আকাশকে অনেকবার কড়া কথা শুনিয়েছে, কারণ, কুসুমকে কিছু বলবার মতো সাহস হয়তো তারা অর্জন করতে পারেনি । এবার আমার পরিচয়ে আসা যাক, আমার নাম রাহুল, আকাশ ও কুসুমের কলেজের অধ্যাপক, যদিও ওরা আমাকে বন্ধুই ভাবতো । কলেজ জীবনের দিনগুলিতে আমি ওদের খুব কাছ থেকে দেখেছিলাম, মিশেও ছিলাম । পড়াশোনায় কুসুম যত ভালো ছিল, আকাশ ছিল ততটাই ফাঁকিবাজ । কুসুম যেমন জেদী ছিল, তেমনিই ছিল আকাশের কাছে তার অগুনতি আবদার । আর থাকবেনাই বা কেন, কেউ যদি তার তার সব আবদার আলাদীনের জীনের মতো পূরণ করে । ওদের বিয়ের একটা মজার ঘটনা মনে পরছে । অনুষ্ঠান বাড়িতে গিয়ে দেখি, গেটের সামনে একটা তাগড়াই আফগান ঘোড়া দাঁড়িয়ে আছে ! ভিতরে গিয়ে জানতে পারলাম, ওটা নাকি কুসুমের একটা ছোট্ট আবদারের নমুনা ! তার আবদার ছিল, আকাশ যেন পৃথ্বীরাজ চৌহানের মত ঘোড়া ছুটিয়ে এসে তাকে বিয়ে করে । যদিও তার ফল খুব খারাপ হয়েছিল, কারণ আমি গিয়ে দেখি আকাশের অবস্থা খুব শোচনীয় । বুঝতে পারলাম না, ও ঘোড়ার পিঠে এসেছে নাকি ঘোড়া ওর পিঠে এসেছে ! যাইহোক, এই স্বল্পকালীন শিক্ষকতার জীবনে, ছেলে-মেয়ে দু’টি আমার মন ছুঁইয়ে গেছিল । বিয়ের পর ছ’মাস কেটে গেছে, দিনটা শনিবার, গবেষণার কাজে বিশ্ববিদ্যালয় গেছি । কাজটা তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাওয়াই ভাবলাম, আজ ছুটির দিন, ছেলে-মেয়ে দুটো কেমন আছে একবার দেখে আসি । একটা রিকশা ধরে পরিকল্পনা মাফিক হাজির হলাম ওদের অ্যাপার্টমেন্টের সামনে । ২০ টাকা দিয়ে রিকশাওয়ালাকে বিদায় করে, গেটের সামনে দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করলাম, “ দাদা, আকাশ চ্যাটার্জী কোন ফ্লোর এ থাকে, একটু বলবেন?” ৪-৫ টি ভদ্রলোক গেটের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল, ওরা কোন ফ্লোর এ থাকে এটা জিজ্ঞাসা করায় ফ্যালফ্যাল ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো ! আমি ভাবলাম, হয়তো আমিই সেই প্রথম ব্যক্তি, যে বিয়ের পর ওদের সাথে, ওদের ফ্ল্যাটে দেখা করতে এসেছে ! একটা ৫-৬ বছরের বাচ্চা ছেলে ওখানেই খেলা করছিল । সে খেলতে খেলতে আপন মনে দেখলাম বলে চলেছে, “চারতলার উত্তরের ঘরে, বাঘিনী-বিড়াল ঝগড়া করে, কেউ কিছু বলতে গেলে, বাঘিনী নাকি হালুম করে !” বাঘিনী নাকি হালুম করে !”ব্যাপারটা আমার খুব একটা সুবিধার লাগল না ! আমি সিঁড়ি বেয়ে চারতলায় উঠলাম, উত্তর দিকের দরজায় চোখ পরতেই দেখলাম নেম প্লেট এ লেখা আমার স্নেহের দু’টি নাম । একটা আনন্দ মিশ্রিত ভয়ে, আমি দরজার কড়া নাড়লাম করলাম । ৫ মিনিট হয়ে গেল, কেউ আর দরজা খোলে না ! আমি যখন ফিরে যাব ভাবছি, ঠিক এমন সময় দেখি দরজা খুলে আকাশ বেরিয়ে এলো । আমাকে দেখেই সে অবাক হয়ে বলে উঠলো , “স্যার, আপনি?” । আনন্দে আত্মহারা হলেও, প্রণাম করার ওর অভ্যাসটা কিন্তু এখনো সেই রয়েই গেছে । আমাকে ভিতরে নিয়ে গেলে, কুসুম আমাকে দেখে আনন্দে কী যে করবে বুঝে পাচ্ছিল না । ওদের উপস্থিতি আমাকে আনন্দ দিলেও, ঘরে ঢুকে বুঝতে বাকী রইল না, এপার্টমেন্ট এর লোকজন কেন আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়েছিল । ঘরের মধ্যে কিছুক্ষণ আগে যে একটা ছোটখাটো যুদ্ধ হয়ে গেছে সেটা জিনিসপত্রের এলোপাথাড়ি ভাবে পরে থাকা দেখেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে । যাইহোক, এই ব্যাপারে মুখে কিছু না বললেও, কুসুমের উচ্চাশা আর আকাশের প্রতি ওর মনোভাব থেকে বুঝতে অসুবিধা হল না, দাম্পত্য বিবাদের কারণ । যে আকাশকে সে এতদিন দেখে এসেছে, তার কাছ থেকে এখন ভালোবাসার চেয়েও পরিপূর্ণতা, কর্তব্য এবং উচ্চাভিলাষ বেশী গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে । অন্যদিকে, আকাশকে দেখেও পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, কেউ যেন তার পায়ে বেড়ি পরিয়ে দিয়ে বলেছে দৌড়াতে ! অনেক গল্পসল্প করে যখন বাড়ি ফিরলাম তখন রাত ৯ টা । মায়ের হাতে এককাপ চা খেয়ে চিন্তা করতে লাগলাম, ব্যাপারটাকে এভাবে বেশীদিন আর চলতে দেওয়া যাবে না ! হয়তো, আবার একটা স্পেশাল ক্লাস নিতে হবে ওদের । চারদিন ভেবে মাথায় একটা বুদ্ধি এলো, আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে কুসুমকে একটা ফোন করে জানালাম জ্যোতিষরাজ কামাল হাসান যাদবের আশ্চর্য ক্ষমতার কথা। কীভাবে সে একজন মানুষকে জ্যোতিষবিদ্যার মাধ্যমে জীবনের স্বাভাবিক দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সচেতন করে তোলে । আমি আরও বললাম, তুই যদি বলিস আমি উনার সাথে কথা বলে তোদের একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে দিতে পারি । ও প্রথমে একটু অবাক হয়ে আমার কথাগুলো শুনল, তারপর বলল “স্যার, ও তো এসব বিশ্বাস করে না !” আমি বললাম, সেটা তোর দায়িত্ব, আর যতদূর আমি আকাশকে চিনি, তাতে ও তোর এই আবদারটা রাখবে । আমার বোঝানোর পরিপ্রেক্ষিতে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে একসময় কুসুম রাজী হল । বলে দিলাম, রবিবার বিকেল ৫ টায় ৪২০, ঢপের চপ লেন, কলকাতা ৭০০০০০ তে যেন আকাশকে নিয়ে সে পৌঁছে যায় । ফোনটা রেখে খুশি হলাম, প্রথম প্ল্যান ঠিকভাবেই কাজ করেছে । এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, কামাল হাসান যাদব ওরফে কে. এইচ. জে. ( সাধারণ মানুষের ভাষায় যা “কর্মহীন হতাশ যুবক”) একজন বেকার, হতাশ ও ব্যর্থ নাট্যকার । যাইহোক, কামালের সাথে দেখা করে বুঝিয়ে দিলাম, একজন জ্যোতিষের চরিত্রে অভিনয় করতে হবে তাকে ! ৫০০ টাকার একটা নোট ওর পকেটে গুঁজে, ওকে বুঝিয়ে দিলাম কী করতে হবে । এরপর রবিবারটা এলো, আমি কামালের কাছেই অপেক্ষা করছিলাম, দেখি ঠিক ৫ টার সময় একটা ট্যাক্সি থেকে দু’জনে নামলো । কুসুমকে দেখলাম প্রচণ্ড আনন্দে ছটফট করছে, যেন আজই তার স্বপ্ন পূরণ হবে ! আকাশ এই প্রথম আমাকে প্রণাম করল না, বেশ চুপচাপও আছে । আমার এই জ্যোতিষের পরামর্শের ব্যাপারে ও যে বেশ বিরক্ত, সেটা ওর ব্যাবহারে স্পষ্ট । কুসুমের সাথে কামালের কথাবার্তা শুরু হল,__ কামালঃ বাম হাতটা দেখি? কুসুমঃ (হাতটা বাড়িয়ে) কবে আমাদের স্বপ্ন পূরণ হবে, মহারাজ? কামালঃ কোনটা ? বিদেশ যাওয়া নাকি প্রোমোশন? কুসুমঃ (খুশী হয়ে) দু’টোই। কামালঃ আপনার স্বামীর শনির দশা চলছে, তাই সাফল্য পেতে দেরি হচ্ছে । কুসুমঃ তাহলে কবে ও দায়িত্বগুলো ঠিকভাবে বুঝতে শিখবে? কবে নিজের স্বপ্ন, উন্নতি, ইচ্ছে সম্পর্কে সচেতন হবে? কবে আমি ওর উপর ভরসা করতে পারবো? এটা বলেই কুসুম হাঁউমাঁউ করে কেঁদে ফেলল ! কামালঃ (ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে) খুব শীঘ্রই, হয়তো আজই । ওর রাহু down আছে, তার উপর বৃহস্পতির স্থানেও কেতুর সরাসরি দৃষ্টি আছে । আবার, পঞ্চমস্থান থেকে মঙ্গল দ্বিতীয় স্থানে সরে গেছে তাই,__ (হঠাৎ আকাশ ধমকে উঠেছে কামাল কে !) আকাশঃ আপনি আমার স্ত্রীকে ডি-মোটিভেট করছেন কেন ? আপনি কিছু জানেনও না, বোঝেনও না ! শুধুমাত্র আমার স্যার আর স্ত্রীর কথা রাখতে এখানে এসেছি, নইলে আমি এসবে বিশ্বাস করি না । কামালঃ (সম্মানে লেগেছে) আপনি আমাকে জ্যোতিষ শেখাবেন? আমি কুড়ি বছর ধরে চর্চা করছি ! আপনার যদি মনে হয়, আমি ভুল বলেছি, তাহলে আমাকে ভুল প্রমাণ করার জন্য ১০ টি প্রশ্নের ঠিক ঠিক উত্তর দিন । বুঝিয়ে দিন আপনি একজন পরিপূর্ণ, কর্তব্যপরায়ণ এবং উচ্চাভিলাষী মানুষ । তবে মনে থাকে যেন, এই উত্তরগুলোর যথার্থতা বিচার করবে আপনার স্ত্রী ! আকাশঃ উত্তর আমি দেব, তবে আপনাকে ভুল প্রমাণ করার জন্য নয়, নিজেকে ঠিক প্রমাণ করার জন্য ! প্রশ্ন শুরু করুন ! (আমি আর কুসুম দু’টি নীরব দর্শক, অবাক হয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রইলাম ওদের দিকে !) কামালঃ আচ্ছা বলুন তাহলে,__ আপনার কাছে ভালোবাসা কী? আকাশঃ যা অন্যকে কাছে টানে সেটাই ভালোবাসা । যে সম্পর্ক আমাকে আর কুসুমকে এক বন্ধনে বেঁধে রেখেছে, তাকেই আমি ভালোবাসা মনে করি । কামালঃ (একটু অস্বস্তিতে) এবার বলুন দেখি,__ ভরসা কী? আকাশঃ ভরসা হল সেই বিশ্বাস, যা আমি আমার স্যারের প্রতি রাখি, কারণ আমি জানি,__ যতবার আমি বিপদে পরবো, এই লোকটা আমাকে ততবার উদ্ধার করবে। কামালঃ বলুন,__ বিশ্বাস কী? আকাশঃ যা হারালে আর অর্জন করা যায় না ! যেমন আজকে আমি সম্পূর্ণভাবে জ্যোতিষবিদ্যা থেকে বিশ্বাস হারালাম । কামালঃ অন্যায় কী? আকাশঃ যা অন্যকে কষ্ট দেয় । আমাদের বাবা-মা আমাদের মানুষ করার জন্য স্বপ্ন দেখেছিল, আর আমরা আমাদের স্বপ্ন বাঁচাতে তাদের সাথে অন্যায় করেছি । কামালঃ (একটু থেমে) প্রশংসা কী? আকাশঃ প্রত্যেক মানুষ যা নিজের ও কাছের মানুষগুলির নামে অন্যের মুখে শুনতে চাই । ঠিক যেমন আমার স্ত্রী আমার মধ্যে পরিবর্তন চাই, কারণ সে আমাকে ভালোবাসে, আর তাই সে আমার সাফল্যের কথা শুনতে চাই সকলের মুখে মুখে । কামালঃ দুঃখ কী? আকাশঃ আমার স্ত্রীর এই প্রচেষ্টা, যা আমার মনের মধ্যে চঞ্চলতা সৃষ্টি করেছে, সেটাই আমার কাছে দুঃখ । কামালঃ স্বপ্ন কী? আকাশঃ যা দেখতে ভালো, শুনতে ভালো, কিন্তু বাস্তবায়িত করা কঠিন । কামালঃ উন্নতি কী? আকাশঃ যা অর্জন করতে গেলে পরিশ্রম আর অধ্যবসায় প্রয়োজন, জ্যোতিষী নয় তার জ্যোতিষবিদ্যা ও নয় । কামালঃ ইচ্ছে কী? আকাশঃ যা কোনদিন পূরণ হয় না । কামালঃ আচ্ছা, শেষ প্রশ্ন,__ বাস্তব কী? আকাশঃ যা আমার স্ত্রী জানে না । কামালঃ (অবাক হয়ে) কী সেটা ? আকাশঃ আমি যা পেয়েছি, তাতেই আমি খুশী । এতক্ষণ ধরে কুসুম অবাক হয়ে তাকিয়েছিল আকাশের দিকে, এবার যেন তার হুঁশ ফিরল ! তার চোখেমুখে একটা তৃপ্তির ছায়া দেখতে পেলাম, প্রকাশ পেল তার নির্বুদ্ধিতার জন্য আফসোসও । এক মুহূর্তের জন্য মনে হল, জীবনের সবচেয়ে কঠিন প্রশ্নের উত্তর আজ যেন সে পেয়ে গেছে ! তাইতো দু’জনে একে অপরের হাত ধরে বেরিয়ে যেতে লাগলো । জানি না, কী ভেবে আকাশ আমার দিকে একবার ফিরে তাকাল, আর ছুটতে ছুটতে এসে আমাকে বলেছিল, “স্যার, আপনাকে প্রণাম করা হয়নি !”