কার জন্য রোদ ওঠে? - সৌরভ প্রকৃতিবাদী
আজ ঈদ । স্কুল ছুটি। সকালথেকে ঝিম ঝিম বৃষ্টি পড়ছে। বাড়িতে বসে থাকতে পারছিলাম না আর।কাছেই কোথাওএদিক ওদিক ঘুরে আসি মনে করে ১১ টা নাগাদ বেরিয়ে পরলাম।
ছয় সাতকিলোমিটার দূরে ধুলোর বাঁধ। দুদিকে জলা মাঝ দিয়ে পিএমজিএসওয়াই এর রাস্তা।কিশোর বেলা থেকেইমন খারাপ থাকলে মাঝে মধ্যে এদিকে আসতাম। এবার অনেক দিনপর।
দুপাশের বিস্তীর্ণ জলার মাঝে মাঝে এখন কংক্রিটের দেওয়াল উঠেছে। কংক্রিট মানুষের মিলিত সাম্রাজ্যবাদ দখলনিয়েছে শামুকখোলের খাবারের পাতায়। রাস্তার পাশে একটা কারল্ভারট এর ওপরবসেছি, এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় খালে জল তির তিরে। মাঝে মাঝে বাইকে ঈদ জনতাছুটে চলেছে। তাও ওদিকটায় গাড়ি খানিক কম।
হঠাৎ রাস্তা থেকে চোখ খালেরদিকে পড়ল, একটা ফুট তিনের কেউটে খালের একপাশ থেকে অন্য পাশের গর্তের দিকেযাবে বলে বেরিয়েছে। আমায় দেখে তার গতি বেড়ে গেলো। চোখ তুলতেই দেখি ডানদিকের পাঁচিল আর বাব্লা গাছের ফাঁকে একটা বেতেআছড়া, সেও বোধয় অবাঞ্ছিতউপস্থিতি টের পেয়েই অদৃশ্য হল বাব্লা গাছের আড়ালে।
পেটের টানে বাড়িমুখো হব ভাবছি,ছিটকে শালিক, শামুকখোল, ফিঙের ওড়া উড়ি দেখতে দেখতে একটা হেলেও চোখে পড়ল, বেশ রাসভারি হেলে। কেউটে বেতে আছড়া বা আমার মতো তাড়া তার নেই।ভাবখানা এমন যেন বৃষ্টি থেমে রোদ উঠেছে ওরই জন্য।
সত্যি হয়তো ওরই জন্যরোদ ওঠে। কংক্রিটের দেওয়াল গুলো অথবা কংক্রিটের দেওয়াল গুলোয় নিজেদের বন্দী করে ফেলা মানুষ খোলা জলাভূমি, ঝির ঝিরে বৃষ্টির ফাঁকে উঁকি দেওয়া রোদকে সম্মান করতে জানলে, তাদের জন্যও রোদ উঠত, মিষ্টি রোদ। পুড়িয়ে দেওয়া রোদনয়।
আমি ঘর মুখো হলাম।