ওরা আছে বলে আমরা আছি - Kousik
সে ছিল “৯”......
সেবারে গরমের ছুটিতে সে প্রথমবার মামাবাড়ি গেছিলো,
নতুন শহর,প্রথম স্বাধীনতা নিয়মের বেড়াজাল থেকে,বাবা মার থেকে,
নতুন নতুন অনেক মানুষ , তাদের অনেক ভালবাসা ,খুব খুশি ছিল সে,কিন্তু একদিন,কি যে হল......
বড়োরা সবাই গেছিল সিনেমা দেখতে,সে রয়ে গেছিল ঘরে,আর ছিল তার ছোটমামা।।
এই মামাই তার সবথেকে কাছের মানুষ ,ভিডিও গেম,খেলছিল তারা, অন্যদিনের মতই।
হঠাত খেলা শেখানোর আছিলায়,মামা কেমন যেন কাছে চলে এসছিল অনেকটা,তার কাঁধ তার বুক তার শরীর,মামার হাতের অবাঞ্ছিত প্রবেশ ঘটেছিল ,সিউরে উঠেছিল সে,অস্বস্তি যন্ত্রণা ভয় আর হ্যাঁ লজ্জা ,খুব লজ্জা পেয়েছিল সে,সেদিন বুঝতে পারেনি,কাউকে বলতে পারেনি,এক অদ্ভুত যন্ত্রণা দন্দে হারিয়েছিল তার শৈশব।।
আজ সে বুঝতে পারে,কিন্তু আজো, না বলতে আর না ভুলতে পারে ...............
সে ছিল “২৩”......
প্রথম দিন অফিস,কর্মজীবনের শুরু,চোখে রঙ্গিন স্বপ্ন,বুক ভরা নিস্বাস, গুটি গুটি পায়ে নতুনের গন্ধ নিয়ে হাজির হয়েছিল সে......
কিন্তু এক মুহূর্তে সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছিল বাস্তবের কঠিন কংক্রিটে,আত্মমর্যাদা মাথা কুটে কেঁদেছিল,যখন তার বস ফাইল বোঝানোর আছিলায় তাকে স্পর্শ করেছিল তার সম্মতির বিরুদ্ধে,সান্তনায় জুটেছিল “প্রমশানের” আশ্বাস...কিন্তু সে তো এটা চায়নি,সে চেয়েছিল পরিশ্রমি হতে ,মাথা উচু করে তার অধিকার ছিনিয়ে নিতে, অস্বস্তি যন্ত্রণা ভয় আর হ্যাঁ লজ্জা ,খুব লজ্জা পেয়েছিল সে,কাউকে কিছু বলতে পারেনি সেদিনও,শুধু স্বপ্নের নয়,মৃত্যু ঘটেছিল তার শরীরের ,তার আত্মার............
সে এখন “২৮”......
আয়নায় দেখছিল নিজেকে,তার শরীর অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে,নাহ মেদ নয়।।
আর এক নতুন শরীরের আবির্ভাব হয়েছে তার মধ্যে, এক নতুন প্রানের স্পন্দন,সে মা হতে চলেছে।।
সে একা আজ বাড়ীতে,কারন?
কারন সে নাকি অভিশাপের বার্তা এনেছে।।
স্বামী পরিত্যাগ করেছে তাকে,শ্বশুরবাড়ি সম্পর্ক চুকিয়ে দিয়েছে তার সাথে...কারন ??
কারন সে এক মেয়ের মা হতে চলেছে,স্বামী চেয়েছিল abortion,আবার নতুন করে পুত্র সন্তানের preparation……
কিন্তু না, এই প্রথমবার সে চুপ করে থাকেনি,বিদ্রহী হয়েছে, অন্যায় এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে ,মাথা উচু করে জোর গলায় জানিয়েছে “আমাকে অনেকবার খুন হতে হয়েছে,কিন্তু আর না,আর আমি কাউকে খুন হতে দেবনা ,একাই বাঁচব,লড়াই করব,আর যে আসছে...তাকেও লড়াই করেই বাচতে শেখাব”।।