১৩নং সেল –বয়স যেখানে থেমে যায় - ANKUR KUNDU
পাথর-ভাঙা হাতের তালুতে ঐ রেখাগুলি বসেছিল ,
যেভাবে মশাদের ডানা আলগা হয়ে বসে থাকে
এবং বাতাসে সহসা ঝরে পড়ে !
লোকটি রাতের ঘুমেও গরাদের লোহাগুলি খুঁটে যেত ,
পরের দিন ভাঙা নখেই একটি-দু’টি করে ঘামাচি মারত !
গত দু’দিনে ঐ সেলে সাদা পোশাকে কেউ ঢোকেনি –
পুলিশ অথবা দোষী -১৩নং সেলের কয়েদি
এবং ওর দাঁত না-মাজা চাওনি ফেরেনি !
ঐ মেঝেতে ও পড়েছিল . . . দু’-চারটি মাছি ওর দাড়ি ফুঁড়ে
ঢুকতে চেয়েছিল . . . ও মাছিদের ছেড়ে জীবনে ফিরতে চেয়েছিল . . .
রাতের অন্ধকারে রিলিজ অর্ডার আনতে গিয়েছিল
সিঁড়ি দিয়ে নেমে , তারপর ঐভাবেই সে নেমে গিয়েছে ,
এবং ওপরে তাকিয়ে দেখেছে আকাশের বদলে কংক্রিট !
কয়েদিটি মারা গেছে , যেভাবে সকলে মারা যায় –
সেভাবে নয় , বরং মুখ উল্টে মরেছে !
১৩বছর ৩৬৩দিন জীবন পেরিয়ে নির্বাসনের মুখ থেকে
নিজের দেহ ছিনিয়েছিল সে ৷ আজ ওর পোশাক শূন্য ,
এবং কম্বলে শুকিয়ে আছে গড়িয়ে আসা লাল !
চোখ বন্ধ করে অতীত শুকোতে গিয়েই সে আঁৎকে উঠেছিল ,
এবং তখনই আগামী বয়স থমকেছিল ৷