বিগত দশ বছর ধরে আমরা বিরাজমান। কিছু প্রউক্তুশিল কারণে আমাদের মেইন ওয়েবসাইটটি কিছুদিন বন্ধ ছিল। আমাদের কাজ চলছে, আমরা আবার আসিব ফিরে। কিন্তু ততদিন আমাদের এতদিনের আর্কাইভটা প্রকাশ করা থাকল। অনেক পুরনো জিনিসপত্র পাবেন, যদি কারর কন আপত্তি থাকে আমাদের কে মেইল করে জানাবেন। admin@werbangali.com
আপনি যদি আমাদের e-commerce shop খুজ্জেন তাহলে এই লিঙ্ক এ ভিজিট করুন : shop.werbangali.com

জিরাফ –কন্ঠে আটকে কথা - ANKUR KUNDU

শেষ কবে কথা বলেছিলাম ! আওয়াজ তুলেছিলাম প্রথম কবে ! কবে যেন কেতাদুরস্ত কথা পাঠিয়েছিল বিদ্যুৎ দু’হাত দূরের সাড়ে তিনহাত ভাঙা ল্যাম্পপোস্টে !

 

                              শরীর নিয়ে জন্মেও খাঁচার ভিতরে

                              বিকেল দেখেনি সে , বিকল হয়নি সে ৷

                                                    যেটুকু কথা বাইরে ছিল

                                                    যেটুকু দৃষ্টি ভিতরে ছিল

                                                    খাঁচার জালে আটকে ছিল

                              কোনও খুনে গল্পের ক্লু-বিহীন

                              রহস্যের মতো , প্রাণীটি দাঁড়িয়ে নিঃশর্ত ৷

 

ভোরের আলো ফুটতেই আমি রাস্তায় বেরিয়েছি ! দেখছি দু’টো দেহ হাত ধরে হাঁটছে ! বেলা বাড়লেই আরও দু’টো দেহ ওদের সামনে আসবে !

 

                              ও তল্লাটে একটামাত্র গাছ , তা থেকেই

                              পরগাছা এসেছে , তা খেয়ে প্রাণীটি বেড়েছে

                                                    যেটুকু কথা বাইরে ছিল

                                                    যেটুকু দৃষ্টি ভিতরে ছিল

                                                    গাছের ছালে আটকে ছিল

                              মূল গাছটির বয়সের অর্দ্ধেক ওর বয়স ,

                              পরগাছাটি জন্মেছে ওর কথা ফুরানোর পরে !

 

আমার প্রথম ভুল ছিল জন্মানো ও এগিয়ে যাওয়া ৷ দ্বিতীয় ভুলটি প্রতিবছর আসে উর্ধ্বক্রমানুসারে . . . শেষ ভুলটি ছিল সিসিফাসের মতো . . .

 

                              শরীরের দিকে চোখ পড়লেই চোখ

                              ঘুরিয়ে নিই , ঐ নরম মাংস বহুদিন ছুঁয়ে দেখিনি ৷

                                                    যেটুকু কথা বাইরে ও ভিতরে

                                                    সেটুকু কথা জিরাফের ঠোঁটের

                                                    বাইরে –নিঃশ্বাস হয়ে ধুলো ওড়াচ্ছে

                              সমগ্র খাঁচায় চিনেবাদামের মতো গা ঘেঁষে

                              দাঁড়িয়ে আছে , অথচ ওর চোখ ঘষে না ৷

 

দরজার এ’পাশে দাঁড়ালেই ও’পাশের কথা মনে পড়ে ৷ দরজার ও’পাশে থেকে . . . কখনও যাইনি ও’পাশে ৷ পাপোশে পা মুছে একবার ফিরে দেখি চৌকাঠটিকে ৷

 

                              ওর কষ্ট খুব কম হয় ; দুঃখটাই

                              বরং সম্পূর্ণ ৷ কন্ঠ আছে এবং তা অপূর্ণ ৷

                                                    ও কী কথা বলে ?

                                                    ও কী আওয়াজ করে ?

                                                    কবিতা লিখেই কী ও ক্ষান্ত !

                              রাংতায় মোড়া এক স্বচ্ছ জীবনের

                              জন্মদিন জিরাফের গলায় ‘বোবা’ তকমা এঁটেছে ৷

 

এক শিশুর দেহে হাত বুলিয়ে কাঁদিয়ে ছিলাম ৷ এক নারীর দেহে হাত দেওয়ার আগে থমকেছিলাম ৷ তাই নারীকে আর শিশু বলি না . . জিরাফকে বলি ৷

 

                              অনেক বড়ো জায়গায় লিঙ্গভেদে

                              ও ঘুরে বেড়ায় , ও কাউকে স্পর্শ করেনি ৷

                                                    যেভাবে সে তাকায়

                                                    যেভাবে সে নিজের খাবারে মগ্ন

                                                    সেভাবেই সে কথা বলতে পারে না

                              শুধুমাত্র কিছু শুকনো পাতার খসখসানি এবং

                              ওর কন্ঠে কথাদের লড়াইয়ের শব্দ শোনা যায় ৷

 

খাঁচার বাইরে দাঁড়িয়ে দেখেছিলাম কত কথা ! মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে শুনেছিলাম তার পাশের মানুষকে ! খাঁচার জালে ঝোলানো শুকনো ডাল দেখেও জিরাফটা কথা বলেনি !