বিগত দশ বছর ধরে আমরা বিরাজমান। কিছু প্রউক্তুশিল কারণে আমাদের মেইন ওয়েবসাইটটি কিছুদিন বন্ধ ছিল। আমাদের কাজ চলছে, আমরা আবার আসিব ফিরে। কিন্তু ততদিন আমাদের এতদিনের আর্কাইভটা প্রকাশ করা থাকল। অনেক পুরনো জিনিসপত্র পাবেন, যদি কারর কন আপত্তি থাকে আমাদের কে মেইল করে জানাবেন। admin@werbangali.com
আপনি যদি আমাদের e-commerce shop খুজ্জেন তাহলে এই লিঙ্ক এ ভিজিট করুন : shop.werbangali.com

বন্ধু তোমার জন্য - অভিজিৎ পাল

তখন ভোরবেলা,সূর্যোদয়ের আগের মুহূর্ত,অপূর্ব দৃশ্য। চারিদিকটা মেঘে ঢাকা আর পাহাড়ের চুড়াগুলো যেন উকি মারছে মেঘেদের উপর দিয়ে। কিন্তু এই অপূর্ব প্রাকৃতিক শোভা দেখার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা নেই রোহিতের.........সে শুধু চায় এখন এই দুনিয়া ছেরে চলে যেতে,এই সেই দুনিয়া যার একটি প্রাণীও তার পাশে থাকেনি,তাকে বোঝেনি,তাকে কোন গুরুত্ব দেয়নি...............শুধু তার একমাত্র বন্ধু সৌভিক ছারা এই দুনিয়ায় তার আর কেউ নেই,কিন্তু রোহিত তার এই বন্ধুর উপর বোঝা হয়ে আর থাকতে চায় না। তাই সৌভিক যখন আজ ঘুমাছিল তখন রোহিত সৌভিক এর বিছানা এর পাশে একটা বিদায় চিঠি রেখে এসছে.......সে আর বাঁচতে চায় না। এবার সে শুধু এগোবে সামনের দিকে,সব পিছুটান কে পেছনে ফেলে,রোহিত জানে সামনের এই খাদটায় পরলে তার সব দুঃখ কষ্টের সমাপ্তি হবে,তাই সে এগিয়ে গেছে পাহাড়ের ধারে.........ঠিক তখনই ও কার একটা গলা পেল----"এ কি করছিস রোহিত?? হ্যাঁ এটা ঠিক যে এই দুনিয়ায় তোর কেউ নেই,কিন্তু যে ছেলেটা কিছু না ভেবে শুধু তোর পাশে থেকেছে সবসময় যখন তুই একদম একা ছিলিস,তোর নিঃসঙ্গতার সাথী হয়েছে,তোকে নিজের বাড়িতে রেখেছে যাতে তুই তোর বাড়িতে একা না থাকিস!!! যেখানে যেত তোকে সাথে নিয়ে যেত, তোর ছায়ার মতো সবসময় তোর পাশে থেকেছে,তুই তাকেই একা ফেলে রেখে চলে যাচ্ছিস!! এতটা স্বার্থপর হতে পারলি???" রোহিত একবার পিছনে ফিরে তাকাল কিন্তু কাউকেই দেখতে পেল না----আবার ওই গলা এলো----"আমাকে এখানে ওখানে কি খুজছিস?? আমার কোন আকার নেই,আমি শুধু একটা আওয়াজ। তোরই আওয়াজ,তোর অন্তরের আওয়াজ।" রোহিত এবার একটা শ্বাস ফেললো, তারপর মাথা নিচু করে বলল যে "তাহলে আমি এখন কি করব?? আমি যে আর এই জীবন বাঁচতে চাই না...।" রোহিত এ কথা বলে হাঁটু গেরে বসে পরে আর নিস্তব্ধে চোখের জল ফেলে......কিছুক্ষণ পর সে তার কথা শুনতে পেল----"ফিরে যা রহিত,ফিরে যা....এরকম বন্ধু কজনের আছে??? তোর তো গর্বিত হওয়া উচিত!! রোহিত এতদিন তুই নিজের জন্য বেঁচেছিস,এবার তুই ওই বন্ধুর জন্য বাঁচ যে সারাজীবন তোর পাশে থাকবে............ফিরে যা...........................ফিরে যা.................." কথা গুলো যেন আস্তে আস্তে ওই উকি মারা পাহাড়ের চুড়াগুলোর দিকে চলে গেল। রোহিত মাথা তুলে চাইল ওই চুড়াগুলোর দিকে,ওখান থেকে সূর্যের প্রথম কিরণ আসলো রহিতের মুখে। রোহিতের চোখে এখনও জল......কিন্তু সে এখন সূর্যোদয়ের সৌন্দর্য দেখছে। ঠিক যেন কেউ ওকে জীবনে এগোনোর একটা পথ দেখিয়ে দিল। একটা হাল্কা হাওয়া এসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে গেল। রোহিতের দুচোখ জুরিয়ে গেল। রোহিত এবার চারিদিকে চেয়ে দেখল......কে বলেছে তার কেউ নেই?? এই পাহাড় আছে,এই মেঘ আছে,এই প্রকৃতির সৌন্দর্য আছে আর আছে তার পরম বন্ধু সৌভিক। সে জোরে চেঁচিয়ে বলে "আই অ্যাম সরি সৌভিক!!! আমি খুব স্বার্থপর হয়ে পরেছিলাম......কিন্তু আমি এখন কথা দিচ্ছি এই পাহাড়-পর্বত,সূর্য,আকাশ,মেঘেদের সাক্ষী রেখে...আমি আর কোনদিন তোকে ছেরে যাব না। আমি আসছি সউভিক,আমি আসছি......।"