বিগত দশ বছর ধরে আমরা বিরাজমান। কিছু প্রউক্তুশিল কারণে আমাদের মেইন ওয়েবসাইটটি কিছুদিন বন্ধ ছিল। আমাদের কাজ চলছে, আমরা আবার আসিব ফিরে। কিন্তু ততদিন আমাদের এতদিনের আর্কাইভটা প্রকাশ করা থাকল। অনেক পুরনো জিনিসপত্র পাবেন, যদি কারর কন আপত্তি থাকে আমাদের কে মেইল করে জানাবেন। admin@werbangali.com
আপনি যদি আমাদের e-commerce shop খুজ্জেন তাহলে এই লিঙ্ক এ ভিজিট করুন : shop.werbangali.com

ভুতেশানন্দ - আশীষ কুমার

ভুতেদের এখন সময় কাটেনা একেবারেই ।বড় বড় গাছ নেই ,পুরুনো দালান বাড়ি নেই ,জঙ্গলও নেই তেমন ।ভুতেরা এখন কোথায় থাকবে এ চিন্তায়ই শুধু মাথা ঘোরে বয়স্ক ভুতেদের ।একে তো তাদেরই থাকার জায়গা নেই ,এর উপরে ভুতের বাচ্চাদের উৎপাত। তারা খেলতে পারেনা ,স্কুলে গেলে , ক্লাস শেষেই বাড়িতে ফিরতে হয় ।ভুতেদের সব বাচ্চারা ,তাদের বাচ্চাদের বাপ-মাকে আচ্ছা করে ধরেছে। তারা স্কুলে খেলতে পারে না বলে কোন দু:খ নেই । ওরা একটা গানের স্কুল চায়,যেখানে ওরা গান শিখবে ,আর মানুষের মতো বড় বড় চ্যানেলে গান গাইবে । ভুতের বাচ্চারা ও এবার সুপারষ্টার হবে ,এটাই তাদের এখন ভরসা ও আশা ।তাদের দাবী পূরণ করতে হবে । না হলে কোন ভুতের বাচ্চারা আর স্কুলে যাবেনা পণ করেছে। তারা মানুষের বাচ্চাদের ভয় দেখাবে আর বলেছে ভুতের বাচ্চারা ,তারা কখনো নিজের ঘরে ফিরবে না ভুতের বাচ্চাদের এক দফা এক দাবী । ভুতের বাপ-মারাও পরেছে বিপদে ,বাচ্চাদে কথা না শুনলেও হবে বিপদ । ভয় দেখাতে গেলে আবার মানুষের বাচ্চারা না ভুতের বাচ্চাদের ধরে সকেসে ভরে রাখে..।গেল ফুটবল বিশ্বকাপে কি এক বাঁশি আবিস্কার হলরে বাবা ..,তার নামও কি ভয়ানক ,বুবুজেলা ।ভুতের বাচ্চারা সেই বুবুজেলার শব্দ শুনে তো খেলা দেখা বন্ধ করে পুরো একমাস ভুত জ্বরে ভুগলো ,ভুতের বাচ্চারা ।
###
রাত বারোটা ।বুড়ো ভুত, মধ্যো ভুত,নবীন ভুত তরুণ ভুত সবাই মিটিংয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র শহীদমিনারের আঙ্গিনায় বসলো ।মিটিং শুরু । গন্যমান্য ভুত সামনের সারিতে বসলো ।প্রধান অথিতি হলেন ,ভুত স্কুল এন্ড কলেজের প্রভেসর ডা.চেঙ্গো ভুত । বিশেষ অথিতি ভুত নেতা ,জঙ্গু ভুত ওরফে বাংলা ভাই । মিটিংয়ে উপস্থাপন করেন ,তরুণ ভুত অসাকা বিন আফেতি ।তার সুরেলা কন্ঠে মাইকের সামনে গরগর করে উঠলো,শ্রদ্দেয় ভুতগন ও ভুতেদের বা্‌চারা ,সবাই আমার সালাম ও আন্তরিক ভালবাসা নেবেন ।আমরা সবাই একটি মহৎ উদ্দেশ্যে এখানে সমবেত হয়েছি ,তা হলো,বাচ্চাদের মানে ভুতেদের বাচ্চাদের একটি একটি ভুতসংগীত বিদ্যালয় গড়ে দিতে হবে ।
এই উন্নত বিশ্বে কতো কিছু আবিস্কার হচ্ছে প্রতিনিয়ত।যেমন কমিপউটার ,মোবাইল টেলিভিশন ইত্যাদি ইত্যাদি।মানুষেরা কেমন এগিয়ে চলেছে দিনকে দিন,তারা এখন সমুদ্রের গভীরে চলে যাচ্ছে অনায়াসে । শুনেছি চাঁদের নাকি গিয়ে এসেছে মানুষের বাচ্চারা ..! তাহলে আমরা কেন পারবো না ? সামান্য একটা সংগীত বিদ্যালয় গড়তে..(সবার ইদ্দেশ্যে)..? সব ভুতের বাচ্চারা এক সাথে চিৎকার করে উঠলো.. পারবো পারবো অবশ্যই পারবো..।সবাই খুশি হয়ে হাততালি দিল করজোড়ে।উপস্থাপক ভুত একটু থেমে আবার বললো তাহলে এবার এ বিষয়ে মুল বক্তব্য রাখবেন আমাদের প্রধান অথিতি জনাব, প্রভেসর ডা. চেঙ্গো ভুত । আমি তাকে মঞ্চে আসার জন্য অনুরুধ করছি ...
মঞ্চে এসে চেঙ্গো ভুত সবার ইদ্দেশ্যে হাত নাড়লেন ,আপনারা সবাই কেমন আছেন? সবাই একসাথে চিৎকার করে উঠলো,ভাল আছি..। চেঙ্গো ভুত এবার ভাষণ শুরু করলেন- আমরা সবাই মিলে একটা সংগীত বিদ্যালয় তৈরী করবো , এ বিষয়ে আপনাদের বুঝিয়ে বলতে হবেনা এ আমি জানি এবং এনিয়ে কারো দ্বিমত নেই ,তা ও আমি জানি । সবাই কড়তালি দিতে শুরু করলো ..প্রভেসর একটু থেমে আবার বললেন ,স্কুলের জন্য পর্যাপ্ত জমি ও সংগীত শিক্ষক ও রয়েছেন আমাদের হাতে। সব কিছু ঠিকঠাক শুধু বিদ্যালয়ে আমাদের বাচ্চারা গান শিখবে এইটুকুই যা বাকি ।এখন ব্যপার হলো বিদ্যালয়ের নাম কি হবে ,কি নাম দেব আমরা ? আপনারা কি বলবেন?
এঞ্চের সামনে একটা মৃদু কলরব উঠলো ভুতেদের । হঠাৎ মাঝখান থেকে একটা বাচ্চা ভুত বলে উঠলো ,আমি একটা নাম ঠিক করেছি ..পিচ্চিভুতকে একটা বুড়ো ভুত ধমক দিয়ে বলে উঠলো এই চুপ বলছি হারামজাদা ..অআ কখভাল কওে বলতে পারেনা .! সে দেবে স্কুলের নাম..! পিচ্চি ভুত বলে উঠলো না আমি স্কুলের একটা নাম ঠিক করেছি । কেন তোমরা দেখনা মানুষের বাচ্চারা যারা পড়তে পারেনা ,তারা হেডফোন কানে লাগিয়ে কতো সুন্দর সুন্দর ইংরেজী গান শুনে? কই তাদের তো কেই কিচ্ছু বলে না? সবাই তখন চুপ । চেঙ্গোভুত তখন সেই পিচ্চিটাকে মঞ্চে ডেকে নিলেন আর বললেন কি নাম দেবে স্কুলের বলো সোনা? সে সাথে সাথে এক নি:শ্বাসে বলে দিল ‘ভুতেশানন্দ’ চেঙ্গো বললেন এর মানে জানো? সে বললো ভুতেশানন্দ মানে ভুতদের আনন্দের বাড়ি । সবাই একসাথে চিৎকার করে বলে ইঠলো ঠিক ঠিক ও ঠিকি বলেছে । চেঙ্গেভুত তখন বললেন ,তাহলে এটাই হবে আমাদের সংগীত বিদ্যালয়ের নাম ? তোমরা কি বলো ? সবাই বললো হ্যা হ্যা এটাই হবে আমাদের স্কুলের নাম।
##
সবাই এখন পড়লো নতুন সমস্যায় ।গান শিখবে বাচ্চারা ঠিকি ,তবে গান শিখলে কি হবে তারা তো আর নিঝজরা মিডিয়াতে প্রচার করতে পারবে না ..।কারণ প্রচারের জন্য যে যন্ত্রাংশ প্রয়োজন তা একমাত্র মানুষের দ্বারাতেই তৈরী করা সম্ভব ।ভুতেদের দ্বারা সম্ভব নয় । ভুতেরা শত চেষ্টা করলেও যাদু মন্ত্র দারা তা তৈরী করতে পারবেনা ।
##
ভুতেরা এখন সবাই হতাশ । কি হবে এখন..? তাহলে কি তাদের বাচ্চাদের গান শেখা হবেনা ? সুপারষ্টার হতে পারবেনা ভুতের বাচ্চারা ..?এবার চেঙ্গো ভুতের কান্না এসে গেল চোখে । কাঁদতে কাঁদতে বললো আসলে মানুষেরা যা পারে পৃথিবীর অন্য কোন প্রানী তা পারেনা ..। এমন কি প্লটো,বৃহস্পতি,মঙ্গল শনির এলিয়ে দের দ্বারাও তা সম্ভব নয় । সবাই তখন কাঁদতে শুরূ করলো ,থাক আমাদের আর গান করে লাভ নেই .. চলো সবাই ঘরে চলো ..