মাতৃবন্দনা - Shyamal Kumar Sarkar
মাতৃবন্দনা
শ্যামল কুমার সরকার
হে বীরপ্রসূবিনী রত্ন ধারিণী
শান্তি স্বরূপিনী ওয়ি জগজ্জননী
মা আমার
বাহুতে তোমার অযুত শক্তি, হৃদয়ে তোমার অমিত ভক্তি
বাক্যে তোমার সুমধুর ভাষা
পেল কত প্রাণ নব নব আশা
শান্তি সুধার আকর তুমি হে জগতের পালয়িত্রিনী
মা আমার ।
নব বিধানের গাহিয়া গান, নবীন যন্ত্রে তুলিয়া তান
নেচে নেচে তুমি ছুটে চল ওই অবিরত অবিরাম
তোমারি পরশে নবীন হরষে
বহে নব জীবনের ধারা
নব উমে করি কাজ
আমি যেন আজ উন্মত্ত পথিক, বাধা-বন্ধনহারা
দেখি, সন্মুখে দাঁড়ায়ে দুহাত বাড়ায়ে
তুমি করিছ আশীর্ব্বাদ
মিটিল সকল সাধ
ধন্য হলাম আমি,
যখনি হয়েছি পথভ্রষ্ট তখনি তোমার পেয়েছি আশীষ
সে যে তোমারি দান
আমার দুর্দিনে শুনিয়েছ আশার বাণী
তুমি সংকটে হয়েছ প্রকট দেবীরূপে বিপত্তারিনী
মা আমার ।
তুমি স্মিতমুখে সবারে দিয়েছ তোমার অমৃতধারা
আকন্ঠ করিয়া পান, পেলাম নবজীবন দান
জুড়াল বুকের এই শুষ্ক সাহারা
তব মুখ পানে চেয়ে
নূতন প্রভাতে খুঁজি নব জীবনের ধারা
আমার আজ এ কী হল ! আমি যেন চঞ্চল দিশাহারা
উন্মাদের মত ছুটে চলি
দিক্ হতে দিগন্তরে নূতনের সন্ধানে
আর তুমি, দুহাত বাড়িয়ে রয়েছ দাঁড়িয়ে মানবের উদ্ধারতারিণী
মা আমার ।
তুমি সদা জাগ্রত প্রহরীর মত
জীব ও জাতিকে রক্ষা করেছ নিজ সন্তানের মত
মানুষের বিবেক ও বুদ্ধি যখন তোমার চরণে লুটায়
যত অহংকার, আত্মগরিমা সব ঢেকে যায় তব মহিমায়
মলিনতা ছিল যত সব হয়েছে পদানত
চিত্ত আমার তৃপ্ত আজিকে বাধা বন্ধনহারা
ছিলাম মনিহারা ফনি, বেদনা খনি
চিত্ত চেতনাহারা
তোমার স্পর্শে আজ আমি হয়েছি আত্মহারা
তুমি হতাশার বুকে আশার প্রদীপ
ধ্বংসের মুখে জীবনদীপ
ধরাধূলি যবে অসুরের তান্ডবে ক্ষতবিক্ষত
তখনি তুমি মহাপ্রলয়ের মাঝে দেবীরূপে দূর্গতিনাশিনী
মা আমার ।
তোমার মাঝে পেয়েছি অমৃতের সন্ধান
করব নাকো ভয়
তোমার কোমল স্পর্শে
তৃষিত হৃদয় হল মনোময়
যেন শুষ্ক মরুতে শান্তির মরূদ্যান
মাগো, এ যে তোমারি দয়ার দান
আমি আপ্লুত, আনন্দে দু হাত তুলে গাহি যে তোমারি গান
তব সন্মুখে দাঁড়ায়ে ভক্তিভরে প্রার্থনা করি
সবাই সুখে থাকুক, হোক মানুষের কল্যান
নিজের দুঃখ ভুলে যাই, ভুলি না তোমার দান
দুচোখের অন্ধকারের মাঝে 'আলোর ঠিকানা' খুঁজে বেড়াই
আর(দেখি)তুমি আশীর্ব্বাদের পশরা নিয়ে
সবার দুঃখ করিছ মোচন,
তুমি যে দাতার দাতা পরিত্রাতা লোক কল্যানকারিনী
মা আমার ।