বিগত দশ বছর ধরে আমরা বিরাজমান। কিছু প্রউক্তুশিল কারণে আমাদের মেইন ওয়েবসাইটটি কিছুদিন বন্ধ ছিল। আমাদের কাজ চলছে, আমরা আবার আসিব ফিরে। কিন্তু ততদিন আমাদের এতদিনের আর্কাইভটা প্রকাশ করা থাকল। অনেক পুরনো জিনিসপত্র পাবেন, যদি কারর কন আপত্তি থাকে আমাদের কে মেইল করে জানাবেন। admin@werbangali.com
আপনি যদি আমাদের e-commerce shop খুজ্জেন তাহলে এই লিঙ্ক এ ভিজিট করুন : shop.werbangali.com

ফ্রেন্ডশিপ ডে - দেবাশিস বিশ্বাস

৩রা আগস্ট, ২০১৪
রবিবার 

 

স্কুলজীবন টা যদি পুরোটা ডায়েরি বন্দি করতে পারতাম, হয়তো সবথেকে ভালো হত। আমার জীবনের সোনালি, রুপালি বা ধূসর খয়েরী রঙগুলো হয়তো স্মৃতির মোনোক্রোম হয়ে যেত না। কিন্তু কি করবো? তখন ছোট ছিলাম, বুঝতাম ই না। এই হস্টেলের স্বাদহীন ডালভাত, ঘুম মোছা ক্লাসরুম, ঘাম ঝরা খেলার মাঠ এক সময় রূপম ইসলাম এর ভাষায় "জীবনের সেরা স্মৃতিগুলো" হয়ে যাবে। যাকগে সে কথা, আজকে যখন সারা বাজার, সমস্ত পার্ক, সবটা ফেসবুক ফ্রেন্ডশিপ ডে তালে নাচছে, অনেক পুরনো একটা ছবি আবার মনের আঁকার খাতায় মোনোক্রোম আঁকতে বসল।

তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। মাসটা অগাস্ট, দিনটা ফ্রেন্ডশিপ ডে। আমাদের ক্লাসেরই একটা মেয়ে, নতুন নতুন বন্ধুত্ব হয়েছে তখন তার সাথে। কো-এড স্কুল হলেও তখন টিচার দের ভয়ে ছেলেরা মেয়েদের সাথে সেরকম একটা ভিড়ত না। তো বলাই বাহুল্য, আমাদের বন্ধুত্ব টাও ছিল গোপনে। টিচারদের থেকে তো বটেই, ক্লাসের বাকি ছেলেমেয়েদের থেকেও গোপন রাখা ছিল আমাদের বন্ধুত্ব, কে জানে, কে আবার কি ভেবে বসবে? সে যাইহোক, দিন যখন একটা আছে, সেটা পালনও করতে হয়। কিন্তু কিভাবে? আমাদের আবার হোস্টেল থেকে বাইরে বেরোনো ছিল নিয়মবিরুদ্ধ। সাতপাঁচ ভেবে অগত্যা এক স্যার এর কাছে বলে বসলাম - "স্যার, কাল তো ফ্রেন্ডশিপ ডে! তো আমাকে একটা ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড এনে দেবেন?" আর তারপরে বলে ফেললাম সেই বান্ধবীর নাম, ধাম, বৃত্তান্ত। জানিনা কেন, কিন্তু অন্য সবার মত সেই স্যার কিন্তু আমায় বকলেন না। বরং এনে দিলেন একটা ছোট ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড। অবাক হয়ে গেছিলাম। তারপর অনেক প্ল্যান করে, অনেক চোখের আড়াল করে, সেই মেয়েটির হাতে পরিয়ে দিয়েছিলাম আমার বন্ধুত্বের বন্ধন। অর অবাক করা চোখের সেই হাসি টাই ছিল, আমার সর্বসেরা উপহার।

কিন্তু সময় যে বড়ই বেয়াড়া। গেছোদাদার মত সে আজ দমদম, তো কাল দার্জিলিং করতেই থাকে। তাই সময়ের হাত ধরেই একসময় তার জীবন থেকে বন্ধু, আর বন্ধুর বন্ধুত্ব দুটোই সরে পড়েছে। স্কুলের সব উৎসাহী মুখ গুলো আজ উদাসীন হয়ে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত। তাই নস্ট্যালজিয়ার পক্ষিরাজ এ চেপে সেই রুপকথার দেশের একটু ধূসর রঙ নিয়ে এলাম।

যতই হোক, মনোক্রোম হলেও, সেটা তো ছবিই!